জরিমানা আদায়ে বেড়েছে হেলমেট ব্যবহার

Passenger Voice    |    ০১:১৮ পিএম, ২০২১-১০-১৫


জরিমানা আদায়ে বেড়েছে হেলমেট ব্যবহার

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল চালকদের মাঝে হেলমেট ব্যবহারের সংখ্যা বেড়েছে। চালকদের মাথায় শোভা পাচ্ছে নানা রঙের হেলমেট।

গত ১ অক্টোবর শুরু হওয়া নীলফামারী জেলা ট্রাফিক বিভাগের মাসব্যাপী অভিযান ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর পাল্টে গেছে সৈয়দপুরের চিত্র। এখন শতকরা ৯০ ভাগ মোটরসাইকেল চালকের মাথায় হেলমেট শোভা পাচ্ছে। অভিযানকালে গতকাল পর্যন্ত ১৪ দিনে হেলমেট ব্যবহার না করার দায়ে ৩৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় এ পর্যন্ত ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে মোটরসাইকেল মালিক ও চালকদের।

নীলফামারী জেলা ট্রাফিক বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, ‘চলেন যদি হেলমেট ছাড়া, মরণ আপনাকে করবে তাড়া’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে সৈয়দপুরে শুরু হয় মাসব্যাপী অভিযান ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম। মোটরসাইকেলজনিত দুর্ঘটনারোধে হেলমেট ব্যবহারে সচেতনতা ও একই বাইকে তিনজন ওঠা বন্ধে চলা এ অভিযানে গতকাল ট্রাফিক বিভাগ ৩২টি মামলা করেছে। এ নিয়ে গত ১ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত ৩৯০টি মামলায় ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

এছাড়া মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন না থাকাসহ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও অন্যান্য কারণে আরও ৩০টি মামলা হয়েছে।

নীলফামারী জেলা ট্রাফিক বিভাগের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী ও জ্যোর্তিময় রায়ের নেতৃত্বে এসব অভিযান পরিচালনা করছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. আশরাফ কোরায়শী, শহর ও যানবাহন উপপরিদর্শক আব্দুল খালেকসহ অন্যরা। ফলে মাসব্যাপী চলা এ অভিযানের কারণে সৈয়দপুরের গোটা চিত্র পাল্টে গেছে। এখন বেশিরভাগ মোটরসাইকেল চালকের মাথায় দেখা যাচ্ছে হেলমেট। অন্যদিকে হেলমেট নেই, এমন মোটরসাইকেল চালকের সংখ্যাও কমে গেছে। গতকাল উপজেলার বঙ্গবন্ধু চত্বরের পাঁচমাথা মোড়, দিনাজপুর রোড মোড়, পোস্ট অফিস মোড় ও বাসটার্মিনাল চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

আরো পড়ুন: হেলমেট না পরেও ট্রাফিক পুলিশকে ক্ষমতা দেখাল ডিএনসিসি প্রকৌশলী

বাসটার্মিনাল মোড়ে কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নাজমুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মোটরসাইকেল চালানোর সময় মাথায় হেলমেট ব্যবহার খুবই জরুরি। এতে নিজের নিরাপত্তার পাশাপাশি পরিবারও চিন্তামুক্ত থাকে। তাই তিনি মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট ব্যবহার করে থাকেন।

একই কথা বলেছেন স্কুলশিক্ষক ওমর ফারুক, ব্যবসায়ী মেহেদি, ব্যাংকার আমিনুল ইসলাম। তারা জানান, ট্রাফিক বিভাগের এ কার্যক্রম শুধু মাসব্যাপী নয়, সব সময় চালু রাখা প্রয়োজন।

ট্রাফিক বক্সের সামনে কথা হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মামলা হওয়ার চেয়ে হেলমেট পরা জরুরি। তাই বুধবার তিনি শো-রুম থেকে হেলমেট কিনে ব্যবহার করা শুরু করেছেন। এখন থেকে তিনি নিয়মিত হেলমেট ব্যবহার করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

জানতে চাইলে ট্রাফিক বিভাগের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, তাদের এ অভিযান মোটরসাইকেল চালক ও মালিকদের সচেতন করার জন্য। তারা হেলমেট পড়ে মোটরসাইকেল চালালে নিজেও নিরাপদ থাকবেন, পরিবারও চিন্তামুক্ত থাকবে।

তিনি বলেন, শহরে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক সদস্যরা কঠোর পরিশ্রম করার পাশাপাশি অভিযানও পরিচালনা করছেন। এতে ট্রাফিক বিভাগ সাফল্য পাচ্ছে। অভিযান শুরুর পর মানুষজনের মাঝে সচেতনতা ও ফিরে এসেছে। এখন গড়ে ৯০ জন মোটরসাইকেল চালকের মাথায় শোভা পাচ্ছে হেলমেট। তিনি মামলায় না পড়ে সবাইকে হেলমেট ব্যবহার করার আহ্বান জানান।